বৃহস্পতিবার, ৩১ অক্টোবর, ২০১৩

তুমি কেমন আছো? তোমাকে অনেক বেশি মনে পড়ছে আমার। তোমার সাথে কথা বলার সৌভাগ্য তো সৃষ্টিকর্তা কেড়ে নিয়েছেন, তাই এখানেই তোমার সঙ্গে কথা বলছি। জানি না তুমি কোনোদিন আমার কথা পড়বে কি না। উত্তর কখনোই দেবে না সে কথা জানি। কিন্তু তবুও যে তোমার সাথে কথা বলতে খুব ইচ্ছে করে।

জানো নিদ্রাহীন রাতের একটা বিশেষত্ব হচ্ছে তোমাকে নিয়ে ভাবার অনেক সময় পাওয়া যায়। মানুষ তার জীবনের একটা বড় সময় ঘুমিয়েই কাটিয়ে দেয়। না ঘুমালে আবার তার শরীরও খারাপ করে। তুমিই তো আমাকে কতো বকাবকি করেছো না ঘুমানোর কারণে। ভাবছো এখন তুমি নেই, বকাবকির কেউ নেই, তাই আরামে না ঘুমিয়ে থাকছি তাই না? না ঘুমিয়ে থাকছি ঠিকই কিন্তু তা যে কতোটা ইচ্ছে করে তা কেবল আমিই জানি। হয়তো তুমি বলবে, জীবনকে মেনে নিতে। হয়তো তুমি শুকনো কাঠের মতো খটখটে মন নিয়ে আমাকে উপদেশ দিবে তোমাকে ভুলে যেতে। কিন্তু আমার জীবনে যে তুমি একেবারে গেঁথে আছো, সেই কথা যে তুমি এতোদিনেও উপলব্ধি করোনি, তা কি আমি জানতাম বলো?

তোমার সাথে কাটানো প্রতিটা মূহুর্ত আমার কাছে স্বপ্নীল সোনালী বলে মনে হয়। মূহুর্তগুলো তো আর ফিরে আসবে না, ফিরে আসে কেবল সেই মূহুর্তের অনুভূতিগুলো। একবুক বেদনার ফসল কতগুলো তুচ্ছ মূল্যহীন অশ্রু ঝরিয়ে যায় সেই অনুভূতিগুলো। কেন তুমি আমার হলে না? আমি ভুল করেছিলাম, সেটা কি এতোটাই বড় ভুল ছিল যে আমার জীবন থেকে তোমাকে সরে যেতে হবে?

লোকে বলে, যে চলে গেছে তাকে চলে যেতে দেয়া উচিৎ। আমার জন্য বিশেষ কেউ হলে নাকি সে নিজেই আসবে। আর যদি না আসে, তাহলে সে আমার জন্য না। কিন্তু আমি যে তা মানতে পারছি না। তুমি আমাকে ভালোবেসেছো, সেই ভালোবাসার গভীরতা উপলব্ধি করতে আমার এতটুকু ভুল হয়নি। হ্যাঁ, প্রতিদান দিতে হয়তো কিছুটা সমস্যা হয়েছে, কিন্তু কখনোই কি আমি তোমাকে তোমার ভালোবাসার মূল্যায়ন করতে পারিনি? কখনোই কি তোমাকে আমি মন থেকে ভালোবেসে তোমাকে একটা সুখী জীবনের স্বপ্ন দেখাতে পারিনি? একবারের জন্যও কি তোমার মনে হয়নি তুমি সত্যিই আমার সঙ্গে সুখী?

আমার বিশ্বাস হয় যে তোমার তা মনে হয়েছে। কারণ, তুমি আমাকে বলেছো। আর তুমি কখনো মিথ্যে বলোনি আমার সঙ্গে। আমি জানি তুমি সেই সুখ পেয়েছো। তারপর হঠাৎ ঘটে যাওয়া কিছু বেখেয়ালিপনার জন্য তুমি এভাবে চলে যাবে? তোমার কি একবার মনে হলো না যে আমি যখন একবার তোমাকে সুখী করতে পেরেছি, তাহলে বারবারও তোমাকে সুখী করতে পারতাম? আমার দুঃসময়ের কিছুটা প্রভাব তোমার উপর পড়লো বলে তুমি এভাবে আমাকে ছেড়ে চলে যাবে?

নিজেকে আমি যে প্রশ্নটা সবচেয়ে বেশিবার করি, সেটা হলো তুমি কেন চলে গেলে। তুমি তোমার যুক্তি দেখিয়েছো। তুমি বলেছো আমাদের মাঝে ঝগড়া চলতেই থাকবে। তুমি বলেছো তুমি বিশ্বাস করতে পারোনি আমার কথা। কিন্তু তুমি আমাকে যতোটা ভালোবেসেছো, ততোটা ভালোবাসার সঙ্গে তো জীবনে একটা মাত্র বার তোমার বিশ্বাস অর্জন করতে না পারার যুক্তি মেলে না। আমিই তোমাকে জিজ্ঞেস করেছি আমি তোমার বিশ্বাস ভেঙেছি কি না। তুমিই বলেছো আমি তোমার বিশ্বাস ভাঙিনি কখনো। তবে বলো কী এতো মন্দ ছিল আমাকে, আমার প্রতিশ্রুতিগুলোকে জীবনে একবার বিশ্বাস করতে?

প্রশ্ন করতে থাকলে প্রশ্ন আসবেই। আমি জানি তুমি যদি এই লেখা পড়তে বসো, তাহলে এতক্ষণে বিরক্ত হয়ে গেছ। তোমাকে আর বিরক্ত করবো না। তোমার সঙ্গে আমি আমার কল্পনায়ই এখন সব মনের কথা বলি। কেবল তোমাকে বিরক্ত করা কথা নয় কিন্ত, বরং আমার সব কথা তোমার সঙ্গে ভাগাভাগি করে নেই। মনের আঙ্গিনায় তোমাকে সেই নববর্ষের শাড়িটা পরিয়ে বসাই। তারপর তোমার সঙ্গে বলি রাজ্যের সব কথা। আর কল্পনায় দেখি তুমি গালে হাত দিয়ে বসে আমার সব কথা শুনছো আর মাঝে মাঝেই হেসে উঠছো। এক সময় আমিও কথা বাদ দিয়ে শুধু তোমার দিকে তাকিয়ে থাকি। পৃথিবীতে আমার একমাত্র তুমিই আছো, যার দিকে তাকালে আমার মন শান্তিতে ঠিক ভরে উঠতো।

আজ তুমি আমার জীবনে নেই। কিন্তু আমার মনে-প্রাণে ভালোবাসায় আর প্রতিদিনের প্রতি মূহুর্তের প্রতিটা হৃদস্পন্দনে তুমি আজও আছো ছায়ার মতো। চোখ বন্ধ করলেই তোমাকে স্পষ্ট দেখতে পাই। যেন তুমি আছো আমার থেকে মাত্র কয়েক ইঞ্চির দূরত্ব।

বিধাতা কেন এই কয়েক ইঞ্চির দূরত্বকে এতো বড় এতো দীর্ঘ করে দিলেন, তা আমার আর কোনোদিনই জানা হবে না।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন